শনিবার, ০৫ Jul ২০২৫, ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
সংবাদ শিরোনাম :
আবনায়ে ক্বাদিম সাকিতপুর মাদরাসার কমিটি গঠন সমাজ ও রাষ্ট্রের দুষ্টচক্রকে নির্মূল করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে: বিভাগীয় কমিশনার খান মোঃ রেজা-উন-নবী সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা জমিয়তের প্রার্থী বাছাই সম্পন্ন সুনামগঞ্জ-৩ আসনে জমিয়তের হেভিওয়েট প্রার্থী হাফিজ মাওলানা সৈয়দ তামীম আহমদ দিরাই পৌরসভার বাজেট পেশ সুনামগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় মাদকের চালান আটক দিরাইয়ের সেনা বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার ৪, গুলিতে নিহত নিরীহ আবু সাইদ হেফাজতে ইসলাম মিডল‍্যান্ডস শাখা গঠন: সভাপতি মাওলানা এখলাছুর রহমান, সেক্রেটারী মাওলানা এনামুল হাসান সাবীর লন্ডন মহানগর জমিয়তের ঈদ পুনর্মিলনী ও কার্যনির্বাহি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হত্যার হুমকির শিকার শান্তিগঞ্জ প্রেসক্লাব সদস্য, থানায় জিডি

দিরাইয়ে ঈদের আনন্দ বঞ্চিত ১০ হাজার কৃষক পরিবার

amarsurma.com

মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার:
চৈত্রের শেষ সপ্তাহে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরের বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ার ফলে এবারের ঈদের আনন্দ বঞ্চিত হচ্ছেন অনেক কৃষক পরিবার। এক ফসলী এই বোরো জমির উপর নির্ভরশীল পরিবারগুলোর ঈদের আনন্দবিহীন দুমড়ে-মুষড়ে যাচ্ছে। একটি পরিবারের জীবন-জীবিকা, হাসি-আনন্দ, চিকিৎসা ও শিক্ষাসহ যাবতীয় দৈনন্দিন খরচ মেটানোর অবলম্ভন ছিল এই কৃষি। অথচ এগুলো তলিয়ে গিয়ে তাদের পুরো স্বপ্নই যেন শেষ হয়ে গেছে।
গত ১৬ এপ্রিল দিরাইয়ের তলিয়ে যাওয়া বোরো ধান দেখতে কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক আসেন। তিনি কৃষকদের দু:খ-দুর্দশা স্বচক্ষে দেখে গেছেন। তিনি সাংবাদিকেদের জানান, চাপতির হাওরে প্রায় ১২ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আগামিতে ভিজিএফ-ভিজিডি কার্ডের মাধ্যমে সহযোগিতা করা হবে। দেশে খাদ্য নিয়ে কোন হাহাকার নেই, সেই হিসেবে এই এলাকার মানুষও না খেয়ে থাকবে না।
সর্বশেষ গত ১৮ এপ্রিল দিরাই উপজেলার জগদল ইউনিয়নের হুরামন্দিরা হাওরটি তলিয়ে যায়। এ হাওরে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে হুরামন্দিরায় প্রায় এক হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছিল। তবে স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, হাওরটিতে অন্তত আড়াই হাজার হেক্টর বোরো জমি রয়েছে। এই দুই হাওরসহ তলিয়ে যাওয়া হাওরের ১২ হাজার কৃষকের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার কৃষকের ঘরে ঈদের আনন্দ নেই বলে খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে অধিকাংশই দাদনের ঋণে জর্জড়িত। তাদের পেছনে দাদন ব্যবসায়িরা প্রতিনিয়ত ঋণ পরিশোধের চাপ অব্যাহত রেখেছে বলে বিশ্বস্ত বেশ কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, দিরাইয়ে জমির মূল মালিক, বর্গা চাষিসহ দুই শ্রেণির লোকজন বোরো আবাদ করে থাকেন। অনেক জমির মালিক নিজে পুরোটাই বোরো আবাদ করেন, আবার অনেকেই কিছু নিজে করে বাকিটা বর্গা দিয়ে দেন। বর্গা চাষিরা আবার অনেকেই জমির মালিকের কাছ থেকে নগদ অর্থ দিয়ে জমি লিজ নেন, অনেকেই ধান তুলে অর্ধেক পরিশোধের শর্তে জমি লিজ নেন। তবে সাম্প্রতিককালে নগদ অর্থ দিয়ে জমি লিজ নেয়ার সংখ্যাই বেশি। এমতাবস্থায় বর্গাচাষিরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছেন হাওর তলিয়ে যাওয়াতে।
যাদের এক টুকরো জমি নেই, নগদ অর্থ দিয়ে জমি লিজ নিয়েছেন, তারা ধারদেনা করে সুদে টাকা নিয়ে বোরো আবাদ করেছেন। ফলে একদিকে যেমন জমি আনতে টাকা গেছে, অন্যদিকে জমি চাষ করতে গিয়ে দাদন ব্যবসায়িদের খপ্পরে পড়ে এখন নি:স্ব হয়ে ঋণ পরিশোধে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এ কারণে তাদের এবার ঈদের আনন্দ ফিকে হয়ে গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ শ্রেণির সংখ্যাই বেশি। সবশেষ তারা চেয়ে আছেন সরকারের সাহায্যের আশায়। চর্তুমুখি ঋণে জর্জড়িত হয়ে তারা বেকায়দায় পড়ে গেছেন। এছাড়া দাদন ব্যবসায়িদের দেনা পরিশোধ করতে না পারলে অনেকের ঘরবাড়ি লিখে দেয়ার মতো অবস্থার সম্ভবনাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকটি চাষি পরিবার।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com